Tuesday, November 3, 2015

ভারতে কেন মানুষ যায়? ঘুরতে, চিকিৎসা করতে, কেনাকাটা করতে?


যে কারণেই ভারতে যাক মানুষ। ভারত ঘুরার জন্য মন্দ নয়। যারা শুধু কলকাতা নিউ মার্কেট ঘুরে বিস্তর প্রশান্তিনিয়ে দেশে ফেরেন। তাদের জন্য আরো কিছুটা সুখ যোগ হতে পারে কলকাতার রবী ঠাকুরের জোড়াঁসাকো বাড়ি, মার্বেল প্যালেস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, নন্দন, ন্যাশনাল লাইব্রেরী, আলিপুর চিড়িয়াখানা। নিউমার্কেটের আসে পাশে যারা থাকবেন। তাদের একটু হাঁটা অভ্যাস আর পকেটে ১০০ রুপী থাকলে এই জায়গাগুলো ঘুরে আসতেই পারেন । একটি দিনের কিছু সময় ব্যয় করেই ঘুরা হয়ে যাবে। বেশির ভাগ জায়গায় যেতে খরচ হবে বাস ভাড়া মাত্র ৬রুপি। খাবারের জন্য ভাল নন্দন আর যমুনা বাঙ্কোয়েট এর কাছে খালেকের খাবার দোকান।
ঢাকা থেকে মাত্র ৫০০/৬০০টাকায় চাইলে আপনি কলকাতায় পৌছে যেতে পারেন। সময়ও অর্থ সবই বাঁচবে। থাকার জন্য ১০০ ভাগ ফ্রি থেকে ২০০/৪০০ এবং ৬০০ থেকে এসি রুম শুরু ৫০০০/৭০০০হাজার রুপির রুম পাবেন।
থাকা/খাওয়া যাই হোক। ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আমার আগ্রহের শেষ নেই। বিশেষ করে বিনামূল্যের চিকিৎসা কিংবা স্বল্প ব্যয়ের চিকিৎসা।
সাবান, স্যাম্পু,গাড়ি, সংস্কৃতি বেচাবিক্রির পাশাপাশি চিকিৎসা নিয়ে গড়ে উঠেছে ভারতের মেডিক্যাল পর্যটন। সারা দুনিয়া থেকে এখন মানুষ আসে ভারতে চিকিৎসা করাতে। সেই চিকিৎসায় অান্তরিকতার অভাব নেই। কিন্তু আন্তরিকতাটুকু পুরোটাই টাকা দিয়ে কিনতে হয়। এই টাকায় কেনা আন্তরিকতা ছাড়াও ভারতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বিনামূল্যে কিংবা স্বল্পব্যয়ে চিকিৎসার। গেল বছর কয়েক আমি ভারতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে। যারা চিকিৎসাকে পণ্য বানিয়ে ব্যবসা করে না। চিকিৎসা তাদের কাছে মানে সষ্ট্রার সেবা করার সুযোগ। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানুষের ভিড় থাকে।
আরো কিছু বেশিদিন বাঁচতে, কারো কাছ থেকে একটা নীল অপরাজিতা মুঠোবন্দি করবে বলে দুনিয়াব্যাপী বিত্তশালী মানুষদের গন্তব্য যখন ভারত , তখন এই মেডিক্যাল পর্যটন নিয়ে আপনি বিভ্রান্ত হবেন-ই। তাই চিকিৎসা সেবা নামক পণ্য কিনতে ভেবে কিনুন। এটা আপনার অধিকার । শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকুন।
যাদের একটু টাকা পয়সা কম আছে। তারা সব ঘুরে ফিরে কলকাতায় পিজি হাসপাতালে ঘুরে আসতে পারেন। ২রুপিতে যে এখনো চিকিৎসারে শুরু করা যায় তার স্বাদ নিতে পারবেন পিজিতে। আমি নিজেও নিয়েছি। ২রুপির টিকেটে মিনিট ২০/৩০ ডাক্তার আপনার সাথে কথা বলবে। তারপর কপাল ভাল মন্দ যাই হোক কিছু বিনামূল্যের ঔষধও পেতে পারেন।
এই বিনামূল্যের কিংবা স্বল্পমূল্যের চিকিৎসার অনেক সুযোগ বাংলাদেশেও আছে। ঢাকা মেডিক্যাল তার অন্যতম ‍উদাহরণ। এই হাসপাতাল থেকে রোগী ফের যাবার অভিজ্ঞতা খুবই কম। শুধুই গালাগালি করে একটি দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। তারচেয়ে আপনার পরার্মশ,দান,অনুদানের ভাগ দিন এই দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে। সরকারী হাসপাতালের সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি অফিস থাকে সেখানে অনুদান গ্রহণ করা হয়। আপনার অনুদান নিশ্চয় অনেক সীমাবদ্ধতার জয় করতে সহযোগিতা করবে।
ডাক্তারা তো খারাপ ব্যবহার করে। কিন্তু আপনিও যদি একবার ধন্যবাদ না দিন তাদের । তবে কি করে তারা ভাল ব্যবহার করবে। কবে এদেশের মানুষ একবার ধন্যবাদ জানিয়েছি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের হাজার সীমাবদ্ধতার মাঝেও সেবা দেবার জন্য।
আমার মত ভাগ্যবান রোগী সবাই হয় না। ২রুপিতে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পথে কেউ হয়তবা দুই জোড়া নীলকন্ঠ/অপরাজিতা ফুলসহ আমার মত বলবে না নিয়ম করে চলো। সুস্থ হবেই। কে আমার মত ভাগ্যবান আর কে নয় তার হিসেব মিলিয়ে লাভ কি। ক্ষতি কি যদি আপনি শুরু করেন। আপনার পাশের যে মানুষগুলো চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত। তাদের জন্য আশেপাশের বিনামূল্যের/স্বল্পমূল্যের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সহযোগিতা করুন। আপনি সেবা পাবার পর, অন্যের সেবা পাওয়ার পথ প্রস্থ করুন।
বিশ্বাস,আস্থা,ভালবাসা নিয়ে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে আপনিও গালাগালি ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে কাজ করতে পারেন। আপনার কাজ করার পথ আপনাকেই সুগম করতে হবে। আমারও চাই প্রতিটি রোগীর বিছানায় সকালবেলায় দুটো অপরাজিতা ফুল নিয়ে কেউ একজন বলবে শুভ সকাল। পরাজিত হওয়া যাবে না, কোন ভাবেই না। ফুল কি অপরাজিত করে নাকি? রোগ শুধুই ঔষুধে সারে না। দু একটা অপরাজিতা ফুলও ভয়ানক কাজ করে সুস্থ হতে।
পাশাপাশি যদি দেওয়ালে লেখা দেখেন “সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ” রোগ অপরাজিত হবেই এই ভালবাসার কাছে।

No comments:

Post a Comment