Sunday, August 20, 2017

কেল্লা শাহ্, কেল্লা বাবার আখাউড়া

মাজার নিয়ে আপনার আমার মতামত কি। কিংবা আপনি মাজার বিশ্বাসী কিনা তা নিয়ে তর্কের জন্য এই পোস্ট নয়। এই পোস্ট শুধুই কেল্লা বাবা / কেল্লা শাহ / কেল্লা শহীদের মাজার এবং তার ভক্ত কুলের ভালবাসাকে প্রাধান্য দিয়ে।

কেল্লা শাহ্র প্রকৃত নাম হল সৈয়দ আহমদ গেছুদারাজ। ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার আখাউড়া থানার খড়মপুরে অবস্থিত হজরত সৈয়দ আহম্মদ (রঃ) এর দরগাহ। সারাদেশ জুড়ে পরিচয় পাওয়া খড়মপুরের মুল পরিচয় এই দরগা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তার আশেপাশে এলাকায় মাজার ভক্ত প্রচুর মানুষ পাওয়া যায়। আর এই মাজার ভক্তদের আপনি ধর্ম দিয়ে বিভক্ত করতে পারবেন না। ভাবতেই পারেন দরগা কিংবা মাজার মানেই মুসলিম ধর্মনুসারীদের আনাগোনা। কিন্তু আমি বৃহত্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অসংখ্য মাজার দেখেছি যেখানে সনাতন ধর্মের প্রচুর লোক আসে। যদি কেল্লা শাহ্’র মাজার প্রতিষ্ঠার পিছনে ধর্ম আস্তিক-নাস্তিক নিয়ে বিশাল লোকগল্প প্রচলিত আছে।
সেই গল্প নিয়ে তর্ক বা যুক্তি দেখালে অনেক দূর্ পর্যন্ত যেতে হবে। আর আমার জ্ঞানের সীমবদ্ধতা এবং অনাগ্রহের জন্য এই তর্ক বাদ।

তারচেয়ে বরং বলি পিছন থেকে মাজার দেখার গল্প। মাজার নিয়ে আপনার ধারণা যাই হোক। মাজার কিছু মানুষের বিশ্বাস, নেশা, পেশা, আশ্রয়, ধ্যান।

গত ১০ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট ২০১৭ ছিল কেল্লা শাহ্’র মাজারের বার্ষিক ওরস। হাজার নয় লাখো মানুষের ভিড়। তবে স্থানীয়দের ভাষায় কোটি কোটি মানুষ। ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক কেল্লা শাহ্’র ওরসে লাখো মানুষের ভীর হবেই। গ্রামের পর গ্রাম অপেক্ষায় থাকে কবে হবে ওরস। দাদা-দাদী, মা-বাবাসহ এসেছেন এক তরুন। তিন পুরুষেই কেল্লার ভক্ত। তারা প্রতি বছর আসে এবং আসবে। এই বিশ্বাস নিয়ে ফিরে যাবে।
কেল্লা শাহ্’র ওরসে রঙিন পুতুলের দোকান


সবাই যে শুধুই ভক্তির জন্য আছে তা নয়। কেউ কেউ দেখতে আসে, ব্যবসার জন্য আসেন। যেমন কিশোরগঞ্জনের পাখা ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লার সাথে বিশাল দল। সবাই পাখা বানায়। কাপড় সুতা আর বাঁশ দিয়ে পাখা। চাইলে ক্রেতাকে সামনে বসিয়ে পাখা বানিয়ে দেওয়া হয়। পাখার জমিনে নানা বঙিন কাপড়ের ঝালর।
মাজার ঘিরে হাজারো ভক্তে কত কত মানত । কেউ দেয় টাকা, কেউ গরু,ছাগল, মহিষ, মোরগ-মুরগী, চাল, টাকা-পয়সা কত কি।

একদল ভক্তকে দেখলাম গিলাপ দিচ্ছে মাজারে। আমি দাড়িয়ে সেই গিলাপ দেওয়ার রীতিনীতি দেখছি। প্রথমে কয়েকজন ভক্ত গিলাপটি উচুঁ করে মাথার উপর ধরল। তারপর যিনি মানতকারী তিনি গোলাপ জল ছিটিয়ে দিলেন। গোলাপ জল ছিটিয়ে পুরো গিলাপটি যখন ভাল ভাবে ভিজেছে তখন সন্ধ্যার একটু আগে নদীর ঘাট থেকে রাস্তা পার হয়ে মাজারে ডুকল। প্রচুর ভীরে শুনতে পাচ্ছিলাম না তা কি বলছে।তবে বুঝতে পারছি সেই লাল গিলাপ ছুয়ে কয়েকজন বিলাপ করছে। কে কি বলছে বুঝতে পারছি না ভীর ঠেলে সামনে যাওয়া দায়। শুধু দেখছি ভক্তের ভালবাসা কেল্লা বাবা-কেল্লা শাহ্’র প্রতি।

কত বড় মোমবাতি হয় তা দেখতে পাবেন কেল্লার মাজারে। বিশাল বিশাল মোমবাতি। সাপ-বেজির খেলা, কোমর ব্যাথা-মাথা ব্যাথার সাথে সাথে একশন মালিশ, যৌন রোগ-গোপন রোগের ঔষধ। তবে বেশিভাগর রোগ এবং সমস্যা এখানে তাবিজে সারে। হরেক রকম তাবিজ পাওয়া যায়।

চারিদিকে গান হচ্ছে। আমি গানের আসরে দাড়ালাম গান শুনছি। “যাব কেল্লা বাবার বাড়ি, মাঝি ভাসাও তরী”।

মাজারে আসা ভক্তের বড় অংশ নৌকায় যাতায়াত করে
কেল্লা শাহ্’র মাজারের আগতদের একটি বিশাল অংশ আসে নৌাকায় করে। শত শত নৌকা তিতাসের বুকে ভেসে ভেসে ভক্তদের নিয়ে আসে। দিন কয়েকের জন্য নৌকায়ই তাদের বসতি। হিন্দু-মুসলিম ভক্ত এক সাথে এক নৌকায়। নীবনাগর,বাঞ্ছারামপুর, কিশোরগঞ্জ, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়াসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে নৌকা আসছে কেল্লা শাহ্’র মাজারে।

এই ভক্তগুলোর ভালবাসাকে শক্তি হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া যেত। তবে অনেককিছুই সম্ভব। যেমন কেল্লার ভক্তরা তিতাস নদীকে বিশেষভাবে দেখে কারণ এই নদীতে কেল্লা শাহ্’র কল্লা/মাথা পাওয়া গিয়েছিল। ঘাটে দেখেছি রাতে প্রচুর মানুষ গোসল করে।

তিতাস নদী নিয়ে এই মানুষগুলোর শ্রদ্ধা, ভালবাসাকে নিয়ে দূষণমুক্ত তিতাস রক্ষার আন্দোলন শুরু করা যেতে পারে।এক নৌকায় হিন্দু-মুসলিমের অবস্থান। নিশ্চয়ই তাহাদের জন্য শিক্ষা হতে পারে। যারা শুধুই ধর্ম নামের মানুষে মানুষে বিভক্তি খুঁজে।





রাত বাড়ার সাথে সাথে রওনা হলাম।প্রতি ট্রেনে হাজার মানুষ। মানুষের গাদাগাদি ট্রেন চলছে।আমরা ট্রেনে উঠে পড়লাম প্রতিদিন গন্তব্য ঠিক থাকার দরকার কি? যাক ট্রেন ভোরে নামব।
ট্রেনে কেল্লা শাহ্’র গল্প হচ্ছে। কেল্লা শাহ্ কে। কি করে তার কেল্লা পাওয়া গেল জেলে চৈতন দাসের জালে। চৈতন দাসের ইসলাম গ্রহন। কেল্লা শহীদের ভক্তরা আস্তিক না নাস্তিক, শিরককারী তা নিয়ে আপনার আামর যুক্তি তর্ক থাকবেই। তবে বোমা নয়। আর্দশের লড়াই আর্দশ দিয়ে হোক। ভালবাসার লড়াই ভালবাসা দিয়ে। ঘৃণ্যার লড়াই ভালবাসা দিয়ে শেষ হোক।

তিতাসের পানিতে ওযু।


আমার মাজার দেখার সাথে অপ্রাসঙ্গিক একটা গল্প বলি, আমি বছর ৫/৬ আগে মহীসূর যাচ্ছি। নানাদেশের ভ্রমণকারীদের সাথে আমিও ছোট বাসের মাঝামাঝি বসে আছি। ভ্রমনের খরচ কমাতে আমি দুদিনই খাবারহীন প্যাকেজ নিয়েছি। পুরো দলে আমি একমাত্র মানুষ যাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে না। আমি আমার ব্যক্তিগত ঝোলা থেকে খাবার বের করে খাই। প্রথমদিন সিটি ট্যুরে আমার সাথে এক ভারতীয় পরিবারের সাথে খুবই ভাল সর্ম্পক হয়ে গেল। তারা আমাকে খাবার সহয়তা দেয়।

২য়দিন মহীসূর যাবার সময় পরিবারে সবচেয়ে নিশ্চুপ মানুষটি হঠাৎ বাস ছাড়ার আগে জিজ্ঞাসা করল। আচ্ছা আজকে যেখানে যাব কি দেখার আছে? কাল তো ভাল কিছুই দেখি নি। গাইড বর্ণনা দিলেন অনেককিছু মেয়ের তৃপ্তি নেই।

বিশাল মোমবাতি





Sunday, August 13, 2017

লাখো পদ্মের বিল, ঘাগুটিয়া পদ্ম বিল।

যারা ভাবছেন আগামী দুদিন ছুটি কোথায় যাবেন? ঢাকার কাছেই যেতে চান।খরচ একটু কম হবে। সময়টাও একটা বড় বিষয়। তাদের জন্য লাখো পদ্মের বিল ঘাগুটিয়া হতেই পারে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে আখাউড়া উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘাগুটিয়া। ভারত বাংলাদেশ দুইদেশে মিলে এক বিল ঘাগুটিয়া। এই ঘাগুটিয়ার পদ্মবিলই আপনার গন্তব্য।   দুই দেশের মাঝের এই বিলে যে শুধুই আপনার মন ভরবে তা নয়। বরং দেবতাদেরও মন জয় করতেও ভক্তরা  আসে এই বিল থেকে পদ্ম নিতে। ‘দেবী দুর্গার পূজা শুরু হয় ষষ্ঠীতে বোধনের মাধ্যমে। অষ্টমী তিথিতে ১০৮টি জলপদ্ম দিয়ে দেবীর পূজা অর্চনা করা হয়। পদ্মে দেবী দুর্গা, লক্ষী-নারায়ণসহ অন্য দেবদেবীরাও তুষ্ট হন।’ পদ্ম বিলের পদ্মতে ভক্তরা কতটা দেবতাদের মন জয় করতে পারেন তার কোন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে এতটুকু বলতে পারি। পদ্মবিল, পদ্ম আর ঘাগুটিয়া গ্রামের সৌন্দর্য আপনার মন জয় করবে।


ঘাগুটিয়া যাবার রাস্তা


ঢাকা থেকে ট্রেনে আখাউড়া ভাড়া ৭০ টাকা থেকে শুরু। তবে আমি গিয়েছিলাম নিশিতা ট্রেনে। তারপর সিএনজি ( প্রাকৃতিক গ্যাসে চালিত অটো রিক্সা) চালিত রিক্সা ভাড়া করুন। ঘাগুটিয়া বিজিবি (বিডিআর ক্যাম্প) ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। উপভোগ করতে বিলের আশে পাশে হাটার বিকল্প নেই। নৌকা ভাড়া ঘন্টায় ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা। ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া ৫০০০ টাকা পরবে। তিতাস কমিউনিটার কিংবা রাতের শেষ ট্রেন নিশিতা বা চট্টগ্রাম মেইলে চড়ে আখাউড়া। ভোরে সিএনজি অটো রিক্সায় ঘাগুটিয়া ঘুরে বিকেলের ট্রেনে ঢাকায় ফিরতে পারেন।

আখাউড়া থেকে ঘাগুটিয়া যদি কর্নেলবাজার তুলাশিমূল গ্রাম হয়ে যান। তবে রাস্তায় পরবে মিনারকুটে। এখানে একটি ছোট্ট পদ্ম বিল রয়েছে। অনেকে এখানেই নেমে যায়। না অস্থির হবেন না । ঘাগুটিয়া বিল তারচেয়ে অনেক বড়। পদ্মের ভিড় সেখানে আরো বেশি আর মাত্র দুই কিমি ছোট ছোট টিলার রাস্তা পারি দিন। তবে আমি শুনেছিলাম মিনারকুটের পদ্ম মিষ্টি। স্বাদ  ঘাগুটিয়ার পদ্ম  থেকে অনেক বেশি ভাল। তাই আসার পথে আবারও মিনাকুটের বিলে নেমেছিলাম।
কার্তিক মাস পর্যন্ত এখানেও ফুল ফুটে থাকে। তবে বিলের আসল সৌন্দর্য দেখতে চাইলে শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে আসাই ভালো। অথাৎ এখনই সবচেয়ে ভাল সময়। তবে যেদিন বৃষ্টি বেশি হবে তার দুই একদিন না যাওয়া ভাল। কারণ বিলে বেশি পানি হলে পদ্ম তলিয়ে যায়। মাঝে মাঝে উজান থেকে আসা পানিতে পদ্ম তলিয়ে যায়।

যদি প্রবল বর্ষনে পদ্ম তলিয়ে যায় তাতেও আপনার কিছু যায় আসে না। হাজার নয় লাখো পদ্ম পাতা বিলের মাঝে সারিবদ্ধভাবে সবুজ গালিচা তৈরি করে রেখেছে আপনার মন রাঙাতে। পদ্ম পাতায় জলের বিন্দু, পদ্ম পাতায় ভর করে ডাহুকে হাটা চলা, পদ্ম পাতার উপর দাড়িয়ে বকের শিকার ধরার প্রচেষ্টা আপনার ভ্রমনের ক্লান্তি দূর করবে।
পদ্ম ফুল ফোটার পর তার ডগায় সবুজ গোলাকার যা দেখা যায় তাবে আমি ভেবেছিলাম পদ্মের বিচি জাতীয় কিছু হবে। কিন্তু আমার পথপ্রদর্শক তুলি জানাল এটার নাম ঠনা। ঠনা খেতে খুবই সুস্বাদু। আমি দুটা খেয়ে তার স্বাদ সর্ম্পকে নিশ্চিত হই। তারপর ঝিরিঝির বৃষ্টির মাঝে নৌাকায় বসে।

আমার বেসুর কণ্ঠে
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
      একটি ধানের শিষের উপরে
             একটি শিশিরবিন্দু।

আমার বেসুর কণ্ঠে কবিতা শুনে তুলি ব্যাপক শব্দ করে হাসছে।

হাসাহাসি যাই হোক।
কবিতার মত আমার বেলায় তাই হয়েছিল। বছর কয়েক আগে আমি ত্রিপুরায় গিয়েছিলাম একটা পদ্মর বিল দেখতে। হাজার হাজার পদ্ম ফুটে আছে তার মাঝে আমি ছোট ডিঙ্গি নিয়ে কয়েক কিলোমিটার পারি দিয়ে। ভারতের ত্রিপুরার মেলাঘরের রুদ্র সাগরে যে প্রাসাদে উঠি তার নাম নীলমহল। হাজার হাজার পদ্মের মাঝে একটা প্রাসাদ।
আমি ফিরে এসে সেই রুদ্র সাগর আর পদ্মের গল্প করেছিলাম পরিচিত সকল মানুষের কাছে। কিন্তু আজ আমি যে প্রাসাদে বসে পদ্ম ফুল দেখলাম তা মাটির ঘর, উপরে টিনের চাল। জানালা দিয়ে বাতাসে ভর করে ভেসে আসা বৃষ্টির কনা আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। বারবার মনে হচ্ছিল বৃষ্টির ফোটা একটু বেশি বড় হলে  ঘরের চাল ভেদ করে আমার শরীরে লাগবে। সকাল থেকে রাতবদ্ধি ঘাগুটিয়ার পদ্মবিলের এই প্রাসাদের রানীর সাথে গল্প করছি। কত গল্প পদ্মফুলে ঠনা কি করে খায়, পদ্ম বিলের ইদুর কেন এত বেশি, বকের ফাঁদ, ডাহুকের রক্ত সিন্দুর দিলে কি উপকার, পদ্মফুলের মধুর উপকারিতা, জংলার শেয়াল কেন তার বাড়িতেই ঘুরঘুর করে।

 বৃট্রিশ ভারত-পাকিস্থান-বাংলাদেশ  সব শাসকের স্বাদই তিনি পেয়েছেন। শাসকদের স্বাদের বাইরেও তার বুকে জমা আছে কত গল্প দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ। সব শাসকরা শুধুই নেয়। কেউ কিছু দেয়নি। তার পরিবারের এবং এই মহল্লার অনেকেই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে বহু বছর  হল। কেউ দিবে দিচ্ছে। কিন্তু বৃদ্ধা আশা নিয়ে এখনো এপারেই পরে আছেন। মৃত্যু আশা। এই ভূমিতেই মরতে চান।

পদ্মফুলের মধু খাবার শখ আমার। আমি তাকে কথা দিয়ে আসলাম এই শরতের আবার তার গল্প শুনতে যাব।

পদ্মময় ঘাগুটিয়া বিল  যে শুধুই আপনার বিনোদনের জন্য তার নয়। এই বিলের উপর নির্ভরশীল বিশাল এক জীববৈচিত্র। আপনার ও আপনার আগামী প্রজন্মকে পদ্মময় করতে এই জীববৈচিত্রকে আপনার আমার টিকিয়ে রাখতে হবে পদ্ম বিলকে। তাই পদ্ম বিলে এবং তার আশেপাশে এমন কিছু করবেন না যাতে জীববৈচিত্রের সমস্যা হয়। প্লাস্টিকের কিছু ব্যবহার করলে তা গ্রামে বা বিলে না ফেলে রেখে সাথে করে আবার নিয়ে আসুন। গ্রামের মানুষের বাড়ি ঘর কিংবা কোন ব্যক্তির ছবি তুলতে চাইলে অবশ্যই অনুমতি নিন।  পদ্ম বিলে ইদুর মারা, বক, ডাউককে  ধরার জন্য ডিল দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

গ্রামের মানুষদের বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকুন। উচ্চ শব্দে গান-বাজনা থেকে বিরত থাকুন। পদ্ম বিলের পদ্ম ফুল, চাঁদ মালা, ছেড়া থেকে বিরত থাকুন। যদিও কেউ কেউ ১০১টি করে পদ্ম ছিড়ে আনে তার প্রেয়সীর মন জয় করার জন্য।তা থেকে বিরত থাকুন। আমি বলি কি ছবি তুলে আনুন, প্রেয়সীকে পদ্ম বিলে নিয়ে যান। কিংবা ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে যাবেন এই স্বপ্নটা হৃদয়ে পোষে রাখনু। প্রেয়সীর সাথে পদ্ম বিল উপভোগ করার স্বার্থে পদ্ম ছোড়া বন্ধ করুন।

আখাউড়ায় যাবেন আর নাইন স্টারের খিচুড়ি খাবেন না তা কি করে হয়। আখাউড়া শহরে মাত্র ৩০ টাকায় পাবেন দুনিয়ার বিখ্যাত গরুর মাংসের খিচুরি।

আখাউড়ায় আপনি ঘুরার মত অনেক কিছুই পাবেন। ১৪আগস্ট ২০১৭ তারিখ কেল্লা শাহ বা খড়মপুরের ওরসের শেষদিন চাইলে একটা ঘুরতি দিয়ে আসতে পারেন। দেখতে পাবেন কেল্লা শাহ’র ভক্তের তার প্রতি ভালবাস, বিশ্বাস। উরসে সাপ খেলা, বেজি খেলা, গান, নানা পদের গ্রামীন খাবারের সাথে পরিচয় হতে পারবেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জেনেছিলাম।  কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের সোর্সরাও রাস্তায় যাবার পথে নিজেদের পুলিশ দাবী করে মাঝে মাঝে ঐ রাস্তায় ভ্রমণকারীদের বিরক্ত করে। তারা অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করবে। কার অনুমতি নিয়ে এসেছেন? চেয়ারম্যান, বিজিবি অনুমতি আছে কিনা? আপনি তাদের উত্তর দিন সরাসারি যে আপনারা ঘুরতে এসেছেন। দলবেধে গেলে তেমন কোন সমস্যা নেই। শুধুমাত্র একা বা একজন ছেলে এক বেশি ঝামেলা করলে বিডি পুলিশ হেল্পলাইনের সহযোগিতা নিন। তবে অবশ্যই আপনার পরিচয় দেবার সময় সেই কর্মকর্তার নাম পদবী জেনে নিবেন। আখাউড়া থানার নাম্বারটি সাথে রাখুন +৮৮০ ১৭১৩-৩৭৩৭৩১

তবে স্থানীয় জনগণ ও বিজিবি খুবই আন্তরিক। বিজিবির ক্যাম্পের পাশে যে ঘন ছায়ায় ঘেরা পায়ে হাটার পথ পাবেন তাতেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাটিয়ে দিতে পারবেন।

পদ্মময় হোক আপনার দুচোখ এবং আগামী দুদিনের ছুটি।

Sunday, August 6, 2017

মাত্র ৩৫ টাকায় পেট ভর্তি খাওয়া। কত কি যে সম্ভব আপনার এই ঢাকায়।




মাত্র ৩৫ টাকায় পেট ভর্তি খাওয়া। কত কি যে সম্ভব আপনার এই ঢাকায়।

৩৫টাকায় পেট ভর্তি খাবার মানে বিশ্বাস করতেই পারেন আপনি বর্তমানে শায়েস্তা খানের রাজ্যের নাগরিক। বিশ্বাস করুন আর নাইবা করুন। ঢাকায় ৩৫টাকায় পেট চুক্তি খেতে পারবেন। নিন্দুকরা হয়তবা আপনাকে বলবে ড্রেনের পাশে চট দিয়ে ঘেরা ইটালিয়ান হোটেল হবে এই ৩৫টাকার খাবারের অফার।

নিন্দুকের কথা বাদ দিন। আস্থা রাখুন। আর শুনুন । সেই হোটেলের বর্ণনা। নামেই শুধু রাজকীয় হোটেল। তা নয়। 

বলতে পারেন আমরা যারা সস্তায় থাকা খাওয়ার হোটেল খুঁজি। তাদের জন্য ইহা সত্যি রাজকীয় হোটেল। রাজকীয় সেই হোটেলে মাথার উপর ভন ভন করে পাখা ঘুরে। চেয়ারে বসে পাগুলো তুলে দিন। 

মামা ওহ মামা।

ডাক দেবার সাথে সাথে এসে যাবে আপনার ভাগিনা। কি চান বলে ফেলুন।
ভাত-সবজি-ডাল = ৩৫ টাকা।

তাছাড়া আছে ৪৫ টাকা ও ৫৫ টাকার প্যাকেজ। ৪৫ টাকায় পাবেন মাছ। ৫৫টাকায় মুরগীর মাংস। 
পৃথিবী আপনার আপনি যা চাইবেন তাই পাবেন। আমি সস্তায় খাবার আর থাকার জায়গা খুঁজি তাই সস্তায় খাবার এবং থাকার জায়গা আমার চোখে পড়ে।

এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি কতশত সস্তায় খাবারের সন্ধান দিলাম। দু:খ কেউ দাওয়াত দিল না। 

তারপরও আমি তথ্য দিয়ে যাই। এই রয়েল হোটেলের অবস্থান দক্ষিণ যাত্রাবাড়ি। ফ্লাই্ওভারের দক্ষিণ পাশে। মানে আপনি যদি যাত্রাবাড়ি থেকে আসেন তবে ফ্লাইওভারে বাম পাশে উঠার মুর্হুতেই সন্ধান পাবেন।


আপনাদের ভ্রমণ এবং খাবার আনন্দময় হোক।