Tuesday, December 15, 2015

একজন নগরপিতার একটা ডাস্টবিন আর আমালাদের অযুহাতের কাছে হার মানতে পারে না।


 মাননীয় মেয়র আনিসুল হক

আপনার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য শহরের রাস্তায় বড় বড় বিলবোর্ড, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর সামর্থ্য নেই। আমি একজন নাগরিক হিসেবে আপনার প্রতি বেশ কয়েকবার ( ইমেল,ফ্যাক্স,ডাকযোগে) চিঠি পাঠিয়েছি। কোন চিঠি উত্তর পাইনি। চিঠির উত্তর না পাওয়ার ক্ষোভটা আপনি তৈরি করেছেন। কারণ নাগরিকের প্রতি আপনার দায়িত্বশীল আচরণ আমাদের আরো বেশি আশাবাদী করে তুলেছে। তাই আমরা আপনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশের সাহস রাখি। মাননীয় মেয়র সারি সারি দরজা ঠেলে আমলাতাক্রিক জটিলতার মাধ্যমে আমার আপনাকে আমাদের অভাব, অভিযোগ, ভালবাসা জানাতে চাই না। আমরা চাই সকালবেলার প্রাতভ্রমনে আপনার কাছ দিয়ে একটু জোরে হেঁটে যাবার পথে গতি কমিয়ে বলব , ধন্যবাদ মেয়র সাতরাস্তা আর গাবতলীর রাস্তার চিত্রটা পাল্টে দেবার জন্য। মেয়র ধন্যবাদ গ্রহন করুন আকাশ ঢেকে ফেলা দৈত্যাকার বিলবোর্ডের জঞ্জাল সরিয়ে দেওয়ার জন্য। সকালবেলা বাসে অফিস ফেরার পথে পাশে বসা আপনাকে বলতে চাই প্রিয় মেয়র একটা আগ্রীম ধন্যবাদ মোহাম্মপুর মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে থেকে ডাস্টাবিনটা সরিয়ে নেওয়ার জন্য। আমরা বিশ্বাস করি ঢাকা এমনই হবে। চাইলেই নাগরিকরা আপনার কাছে ছুটে যেতে পারবে। আপনি আমাদের এই স্বপ্ন দেখাছেন। আপনার দৃষ্টি আর্কষণের জন্য নিচের চিঠিটি আবারও প্রকাশিত হল। মাননীয় মেয়র শুভ কামনা আপনার জন্য। ঢাকা শহরে একটা শিশুর জন্মগ্রহণে লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। বেশির ভাগ হাসপাতালের বাধ্যতামূলক সিজার বাণিজ্য আর যদি এনআইসিওতে বাচ্চাটা ভর্তি করা যায়। তবে তার ব্যয় কয়েক লক্ষ টাকা ছেড়ে যায়। এই বাস্তবতায় মোহাম্মদপুরের ১০০ শয্যার মা ও শিশু হাসপাতালটি মধ্যবিত্ত,নিম্ন মধ্যবিত্ত, বিত্তহীন মধ্যবিত্ত, কাগুজে মধ্যবিত্ত আর পোষাকী মধ্যবিত্তের জন্য আর্শিবাদ। মাত্র ৫০০০ টাকায় সিজার আর ১২০০ টাকায় সাধারণ ডেলিভারি হয়। স্বল্পমূল্যে প্রতিবছর অসংখ্য নারীদের মাতৃকালী স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। আমরা চাই না ১০০ শয্যা মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে যেন জরুরি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটা যেন না অপেক্ষা করতে হয়। কখন ডিসিসি ময়লাবাহী গাড়িটা সরে যাবে। আমরা চাই, আপনি একদিন হাসপাতালটায় যাবেন। আপনি যাওয়া উপলক্ষ্যে গত ২৫ আগস্ট ২০১৫ সালের সকাল ৯.১৫ মিনিটের মত হাসপাতালের ঢুকার মুখে রাস্তাটা ঝকঝক তকতক করবে। সেই ঝকঝক তকতক রাস্তা দিয়ে প্রতি বছর হাজার নব দম্পতি তাদের নবজাতক নিয়ে হাসতে হাসতে বের হবে। স্বামী তার স্ত্রীকে রুমালটা পকেট থেকে বের করে দিবে নাকে চেপে ধরার জন্য নয়। বেশ কয়েকদিন আলাদা বিছানায় শুয়ার কষ্টে চোখের জল মুছার জন্য। শিশুগুলো সবুজ ছায়া ঘেরা হাসপাতাল থেকে বের হয়ে জানবে এই শহরটা পুরোপুরি বাস অযোগ্য হয়ে পড়েনি। একজন মানবিক মেয়র আছেন যিনি শুধু টেলিভিশন, পত্রিকার পাতায় আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই নয়। তিনি লড়াই করছেন শহরটা বাসযোগ্য করা জন্য। মাননীয় মেয়র আমলাদের ডজনখানিক অযুহাত কিংবা অপ্রয়োজনীয় যুক্তি পিছনে ফেলে হাসপাতালের সামনে থেকে ময়লা স্থানান্তর কেন্দ্রটি সরানোর দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি কোটি মানুষের আস্থা, ভালবাসা আর বিশ্বাসের প্রতীক একজন নগরপিতার একটা ডাস্টবিন আর আমালাদের অযুহাতের কাছে হার মানতে পারে না। আপনার প্রতি শুভ কামনা। শুভ কামনা আপনার প্রতিজন নাগরিক সেবকের প্রতি।