Thursday, March 10, 2016

দুধই যাদের গলার ফাঁস!


দুধই যাদের গলার ফাঁস!


সৈয়দ সাইফুল আলম, বাংলামেইল২৪ডটকম

ঢাকা : রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে মাত্র মিনিট ১৫ সময় লাগে অটোরিকশায় যেতে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড আর রায়ের বাজার থেকে আটিবাজারে কয়েক মিনিট পর পর অটোরিকশা যায়। এ বাজারে গরুর দুধ নিয়ে আসেন রফিকুল, ননীগোপাল, নেপালী, হাজি সাহেবসহ অনেক গোয়াল। 
হাজি সাহেবের পাঁচ গাভী আর একটি ষাঁড়। খাঁটি দুধের নিশ্চয়তা, সঠিক ওজন আর সততার জন্য হাজি সাহেবের সুনাম গ্রামজুড়ে। তার বাড়িতে গরুর দুধ নিমিষেই বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু রবি আর সোমবার দুধই তার গলার ফাঁস। কারণ এ দু’দিন পাইকার আসে না। তাই দুধ বিক্রি তেমন হয় না। দুধের দাম ওই দিনগুলোতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় ওঠানামা করে। 
গেল সোমবার আমরা হাজির হলাম আটিবাজার মসজিদ মার্কেট দুধবাজারে। তেমন কোনো ক্রেতা নেই। মণ মণ দুধ আসছে আটি, ওয়াশপুর, আটি ভাওয়াল, তারিপাড়া, বাবুনসুর, শিকারিটোলা, আটি বাড়ালিয়া, গাটারচর, জয়নগর থেকে। ক্রেতা শুধু আমরা তিনজন। ‘কত মণ দুধ কিনবেন? ৩০, ৩৫, ৪০ যা চান তাই দেন। আমাদের উদ্ধার করেন।’ 
আমাদের স্থানীয় প্রদর্শক আগেই খামার ঠিক করে রেখেছেন দুধ আনার জন্য। খামার মালিকের বাড়িতে আমাদের খাওয়া-দাওয়ার করা আয়োজন হয়েছে। এ দামে দুধ কিনে তার বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া নেহাত অন্যায়। কিন্তু কিছুতেই না খাইয়ে ছাড়বে না। প্রয়োজনে দুধ বিক্রির দরকার নেই। 
আমরা একের পর এক গ্রাম পার হচ্ছি। শুধুই গরু আর গরু। বলা যায়, গ্রামগুলো এখনও গরুর গ্রাম! ঢাকা থেকে শুধু নদী দিয়ে বিচ্ছিন্ন এই গ্রামগুলোর চিত্র। এখনও আপনি চোখ বন্ধ করে যে গ্রামের ছবি দেখেন ঠিক তেমনি।
গ্রামের মানুষগুলো এখনও গরুগুলোকে তাদের পরিবারের অংশই মনে করে। প্রতিটি গরুর আলাদা আলাদা নাম আছে। গরুর জ্বরে মালিকও আক্রান্ত হন। সারারাত জেগে গরুর সেবা করেন তারা। এই গ্রামগুলোতে একটি গরুর বাচ্চার জন্ম যেমন আনন্দের সংবাদ হয়ে আসে তেমনি একটি গরুর মৃত্যুও হাহাকার আনে। 
আশপাশে কিছু ঘোষ বাড়ি আছে। তারা দুধ থেকে মিষ্টি, ঘি, মাখনসহ নানা প্রকার দুগ্ধজাত খাবার তৈরি করেন। কিন্তু তা উৎপাদিত দুধের তুলনায় অনেক কম। তাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অফুরন্ত দুধই গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায় ঝড়, বৃষ্টি, হরতালসহ বিভিন্ন বন্ধের দিন। 
দুপুরের পর পর আমাদের ফেরার পালা। আসার পথে আমিনুল এসে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। ‘ভাই কোক-পেপসি না খাইয়া এক সের দুধ খাইয়েন, স্বাস্থ্য ভাল থাকব, দামেও সস্তা। আমাগো মতো হাজার হাজার গোয়াল আর গরু বাঁচবো, যদি মাইনষে নিয়মিত দুধ খায়।’ 
আমরা একটা বিশাল অপরাধবোধ নিয়ে অটোরিকশায় করে ঢাকায় ফিরছি জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ১৫ টাকা। কারও মুখে কথা নেই। আমরাও এ মানুষদের বিপদের সুযোগ পেয়ে সস্তায় ১ মণ দুধ কিনে বাড়ি ফিরছি। কিন্তু আমি ভালো করে জানি, আগামীকাল আমাকে প্রতি কেজি দুধ ৯০ টাকা করে কিনতে হবে শহরের দোকান থেকে। 
ধানমন্ডি থেকে মাত্র ৫-১০ কিলোমিটার দূরে গ্রাম আর শহরের মধ্যে কী করে প্রতি কেজি পণ্যের দাম তিন গুণ বাড়ে, এ এক বিস্ময়!  মাঝের মুনাফাকারীদের শৃঙ্খলটা ভেঙে যদি অন্য কোনো একটা সুযোগ তৈরি করা যায়, তাহলে কিন্তু হাজার হাজার কৃষক বেঁচে যান। সবুজ গ্রামগুলো সবুজই থাকবে। এই শহরের শিশু-বৃদ্ধরাও কৌটার দুধের স্বাদ নয় কিংবা খাঁটির নামে শুধু বিজ্ঞাপননির্ভর নানা রাসায়নিক উপাদানের দুধ থেকে মুক্তি পাবে। 
উৎপাদন বৃদ্ধি, বাজার, চাহিদা, গবেষণা কতই না ছোটাছুটি হলো! কিন্তু ঢাকার কাছের এই গ্রামের কৃষকদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়া প্রমাণ করে, আমাদের তৃণমূলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে কতটা অসহায়।

Tuesday, March 8, 2016

সব দোষ কৃষ্ণচূড়া আর সাজ্জা খালিদ মাহমুদ মিঠুর।

নন্দিত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গুণী চিত্রশিল্পী খালিদ মাহমুদ মিঠুর হত্যাকারী কৃষ্ণচূড়া গাছটির ছবি আজ অনেক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে/হবে। ঘাতক সেই গাছ ঘিরে অনেকের ক্ষোভ। এই শহরের রাস্তার ধারে আর কোন গাছ থাকবে কিনা তা নিয়েও অনেক মন্তব্য চলছে/চলবে। কিন্তু এই কৃষ্ণচূড়া গাছটিকে যারা ঘাতক বানিয়ে দিল তাদের কোনদিন বিচার হবে না?

সব দোষ কৃষ্ণচূড়া আর সাজ্জা খালিদ মাহমুদ মিঠুর।

কিন্তু দিন কয়েক আগেই এই গাছটির রূপে মুগ্ধ হয়ে হাজার মানুষ প্রশান্তি নিঃশ্বাস নিয়েছে। গেল বসন্তে হাজার কপোত-কপোতীর মন রাঙিয়েছে এই কৃষ্ণচূড়ার রূপে। কত সৌখিন ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে এর রূপ তার হিসেবে নেই।

আজ এই গাছটি শুধুই ঘাতক কৃষ্ণচূড়া, শত শত মানুষের মন রাঙানো, জীবনের জন্য অক্সিজেনের জোগানদাতা আজ সকলের কাছে ঘাতক!!!

এই গাছটি কি বয়সের কারণে ভেঙ্গে পড়েছে? ঢাকার রাস্তার ধারের প্রতিটি গাছকে মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ক্রংকিটের চাপা দেওয়া আছে গাছগুলোর চারপাশে। উন্নয়ন করতে গেলেই বার বার গাছগুলোর শিকড় কেটে দেওয়া হয় কিংবা পুরো গাছ কেটে ফেলা হয়।

ঢাকায় এমন শত শত গাছ আছে যা ভেঙ্গে পড়ার অপেক্ষায় আছে। এই গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হবে নিশ্চয় কয়েকদিনের মধ্যেই। কিন্তু এটি আর একটি ভুল পদক্ষেপ হবে। যে গাছগুলো ঢাকার কোটি মানুষের বাঁচার অন্যতম মাধ্যম অক্সিজেনের জোগান দাতা তাদের রক্ষার জন্য কোথাও কোন পরিকল্পনা নেই। বৃক্ষরোপনের নামে প্রতি বছর যে গাছ লাগানো হয় ঢাকায়, তার কতটা এই শহরের জন্য উপযোগী তা বিবেচনা করা হয় না। নেই কোন নীতিমালা। সিটি করপোরেশনের আরবরি কালচার নামের একটা বিভাগ ছিল। এখন আর আছে বলে মনে হয় না।

এই শহরে কত কারণে যে গাছ কাটা হয় তার কোন পরিসংখ্যান নেই। ভিআইপি চলাচল, নিরাপত্তা, উন্নয়ন, বিশ্বকাপ, সৌন্দর্যবর্ধন, সংস্কার শত অযুহাতে গাছ কাটা হয়। সেখানে গাছের চাপায় পড়ে একজন গুণী মানুষের মৃত্যুর পর হয়তবা আরো শত শত গাছ কাটার সিদ্ধান্ত আসবেই। কিন্তু কোটি কোটি মানুষের জীবন রক্ষাকারী গাছগুলো রক্ষার জন্য এ শহরের কোন সিদ্ধান্ত আসে না।

এই শহরে গাছ লাগানো হয় শুধু্ই সৌন্দর্যবর্ধন আর ঠিকাদারের ব্যবসায়ী উদ্দ্যেশ সাধনের জন্য।ঢাকা শহরের রাস্তার সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া আছে ১২৯টি প্রতিষ্ঠানকে। এসব প্রতিষ্ঠান মূলত রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডার দিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়েছে। প্রতি বছর গাছ লাগানো হয় এবং কয়েক মাস পরই ঐ স্থান শূণ্য। কারণ গাছগুলো লাগানোর সময় ভাবা হয় না এটি উপযোগী কিনা। সড়কের মাঝে অসংখ্য গাছ লাগানো হচ্ছে যা একটু বড় হলেই ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য । কারণ গাছগুলোর সাথে মাটির তেমন কোন যোগাযোগ নেই। আর এই গাছ পড়া দায় যদি গাছের উপরই পরে তবে বলতেই হয় আমরা নিজেদের দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে ভাল থাকতে চাওয়া প্রচেষ্টায় আছি।

কিন্তু কতদিন আর ঘাতক কৃষ্ণচূড়ার উপর দায় চাপিয়ে নিরাপদে থাকব। তারচেয়ে বরং এবার সাজ্জা দেওয়া হোক সিটি করপোরেশনসহ ঐ সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে যারা উন্নয়নের নামে গাছগুলোকে মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। যারা তাদের পরিকল্পনা এক ইঞ্চি জায়গা রাখে না গাছের জন্য।

খালিদ মাহমুদ মিঠুর হত্যাকারী কৃষ্ণচূড়া হয়তবা আমাদের এই জানান দিচ্ছে। এশহর শুধুই মানুষের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা গাছগুলোও এই শহরে নিরাপদ নই। খালিদ মাহমুদ মিঠুর মৃত্যুর পথ ধরে আমাদের সমাধানের পথে হাঁটতে। গাছ লাগানোর একটা নীতিমালা তৈরি করতে হবে। গাছ রক্ষায় আইন তৈরি করতে হবে। ক্রংকিটে চারপাশ চাপা দিয়ে গাছগুলোকে ঘাতক বানানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।

খালিদ মাহমুদ মিঠুর আর কৃষ্ণচূড়া মৃত্যুর পরও যেন আমরা শিক্ষা নেই। বড্ড ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে ঢাকার কথিত উন্নয়ন। ঘাতক কৃষ্ণচূড়াকে শাস্তি নয়, শাস্তির আওতায় আসুক তারা যারা প্রাণরক্ষাকারী গাছগুলোকে ঘাতকের ভূমিকায় অবর্তীন করছে।

ছবি: বাংলা ট্রিবিউন

Saturday, February 13, 2016

শাহবুদ্দিনদের বাংলাদেশ।

ঢাকায় টাকা হলে বাঘের দুধ মিলে মুখে মুখে এই কথা থাকলেও।  টাকা থাকলেই ঢাকায় প্রয়োজনের সময় সিএনজি অটো রিক্সা মিলবে তা দাবী করা কঠিন। 

ঢাকার রাস্তায় সিএনজি অটো রিক্সা এক ভোগান্তির নাম। এই ভোগান্তি নিরসনে সরকার কাজ করছেন। কিন্তু কোন ভাবেই ভোগান্তি রোধ করা যাচ্ছে না। মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া নিতে চালকদের যানজট, শীত, গরম, দুপুরবেলা, বেশি রাত, বেশি ভোর কত শত অযুহাত। সবচেয়ে বেশি অযুহাত মালিক অতিরিক্ত দৈনিক জমা নেয় বিষয়ে। যেহেতু দৈনিক জমা নেওয়ার বিষয়টি সরকার কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাই চালকরাও বাধ্য হয়ে মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।

মোবাইল কোর্ট, মন্ত্রীর দৌড় ঝাপ, বিএটির অভিযান, পত্রিকা-টেলিভিশনের ছবি সংবাদ ছাপিয়ে কোন কোন নিস্তার নেই। ঢাকাবাসী অসহায়। হয় চুক্তিতে নয়তো বা মিটারের বেশি অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে। কাগজে কলমে যাই থাক জনগণকে এটাই ঢাকার রাস্তার নিয়ম। ৬০ ভাগ ভাড়া বেড়ে যাবার পরও মানুষ ভেবেছিল এবার হয়তবা চাইলেই অটো রিক্সা মিলবে । তাদের কে রাস্তায় হতাশ করল চালক-মালিক পক্ষ।

সিএনজি অটো রিক্সার নৈরাজ নিয়ে হাজার খবর পাবেন পত্রিকার পাতায়, টেলিভিশনের সংবাদগুলোতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। কোন ভাল খবরই কি নেই ঢাকার অটো রিক্সা নিয়ে?

এমন কোন চালকই নেই, যে মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া নেয় না। আপনি যেখানে যেতে চাইবেন সেখানেই আপনাকে নিয়ে যাবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে হাজারটা না মাঝে যে দু একটা হ্যাঁ আসতে পারে। মাদারিপুরের মো: শাহবুদ্দিন চাচা  তাদের একজন।
কত বছর এই লাইনে আছেন, তার হিসেব নিজের কাছে মিলানো কঠিন। ঢাকায় সেই বেবি ট্যাক্সি দিয়ে শুরু। ৪০ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। মানুষ ঠকাতে কিংবা জিম্মি করে বেশি আয় করতে চাই না বাবা। মিটারে যা আসে তাতেই খুশি, আয় তো খুবই মন্দ না।

 সকালে একটু তাড়াতাড়ি বের হন তিনি।   দিন শেষে কত মানুষের ঠিক সময় মত অফিস পৌছে দিয়েছেন তার হিসেবেই নাকি তার প্রশান্তি। অফিস টাইমে তিনি কাউকে না বলেন, না। সব গন্তব্যে যেতে রাজি। কিন্তু বয়সের ভারে মাঝে মাঝে কান্তি লাগে। তাই দুপুরটায় বিশ্রাম নেন। তখন মাঝে মাঝে না বলতেই হয়। এই না বলটাতেও ভদ্রলোকের হাজার সংকোচ। খুবই নরম সুরে বলেন বাবা একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।

শাহবুদ্দিন চাচা আর তার গাড়ির মালিক দেলোয়ার শুরু করেছেন। মিটারে গাড়ি চালিয়ে যাত্রীকে গন্তব্যে পৌছে দেবার লড়াই। ঢাকা নিয়ে হাজার হতাশার মাঝে শাবুদ্দিনরাই বাংলাদেশ। আপনি যেমন বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখেন তেমনি বাংলাদেশ গড়ার কারিগর শাহবুদ্দিন। আসুন একটা ধন্যবাদ নেই এই শাহবুদ্দিন  চাচা কে।  এই ধন্যবাদ না দিলে, আপনি আমি পিছিয়ে পড়ব স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার লড়াই থেকে।


ধন্যবাদ শাহবুদ্দিন চাচা।
আমরা বিশ্বাস করি আপনি বাংলাদেশ।
শাহবুদ্দিন চাচার মোবাইল ফোন নাম্বার ০১৯৩৪৩০৪০২৭



Thursday, February 4, 2016

সাদা কালো কিংবা রঙ্গিন সবই সম্ভব এই স্কুলে।

সাদা কালো কিংবা রঙ্গিন সবই সম্ভব এই স্কুলে। গাদা গাদা বই কিংবা সারি সারি পরীক্ষার ঝামেলা নেই। চাইলেই দৌড়ে স্কুল পালানো যায়। একটু জোরে দৌড়ালে সবুজ মাঠ। মাঠ পাড়ি দিয়ে জলে লাফিয়ে পড়লে কার সাধ্য আছে শৈশবকে ধমিয়ে রাখার।
এই রকম স্কুল থেকে যে মেধাবীরা এ শহরে আসে না তা নয়। শহরের বড় বড় স্কুল পড়া বড় মানুষগুলো সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করা অসংখ্য মানুষ আসে এই স্কুল থেকে।
এ স্কুলে শৈশব হত্যা করা হয়নি। হয়তবা চার বছর বয়সে এখানে A তে আপেল শিখানো হয় না। ৭ বছর বয়সে কম্পিউটার নামক যন্ত্রটা দিয়ে বোমা মেরে শহর গুড়িয়ে দেবার খেলায় পরদর্শী হওয়া যায় না।

কিন্তু এখানে ৪বছর বয়সে গ্রামের প্রতিটি বাড়ি চেনা, বাজার থেকে একা একা বাড়ি আসা, বাড়ির পাগলা গরুটাকে নিয়ন্ত্রণ করা। ৭ বছর বয়সে নৌকা চালিয়ে বিলের মাঝখান থেকে শাপলা/শালুক আনা, বাজারে দুধ/সবজি বিক্রি করা, জমিতে মই দেওয়া, পাড়ার সকল গাছ নিয়ন্ত্রণে আসা সবই সম্ভব। এসব যোগ্যতা না হলেও অযোগ্যতা নয়।

গুলশান পার্ক উদ্ধার করুন।

বরাবর
মাননীয় মেয়র 
আনিসুল হক
উত্তর সিটি করপোরেশন
ঢাকা

বিষয় : গুলশান পার্ক উদ্ধার প্রসঙ্গে।

জনাব
শুভেচ্ছা নিবেন। গুলশান পার্কটি অনেকদিন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দখলে ছিল। পরে পার্কটি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে একটি কাবের সাইন বোর্ড পার্কের বিভিন্ন স্থানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি স্থাপনাও তৈরি করা হয়েছে পার্কের ভিতরে। বিগত সময়ে লক্ষ্য করা গেছে যে পার্কগুলোতে একটি কাব বা সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। তারপর ধীরে ধীরে পার্ক,মাঠটি তাদের দখলে নিয়ে নেয়। ফলে স্থানীয় শিশু-কিশোরদের খেলাধূলার সুযোগ বঞ্চিত হয়। বিনোদনের সুযোগের অভাবে শিশুরা ক্রমেই মাদক ও অন্যান অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।


এমতবস্থায় নাগরিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে আপনি পার্কটি রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা নিবেন। আমরা বিশ্বাস করি অন্য কোন প্রতিষ্ঠান নয় বরং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই পার্কটি রক্ষনাবেক্ষনে সক্ষম।


ধন্যবাদসহ
সৈয়দ সাইফুল আলম
+৮৮০..................................
অনুলিপি
১.    চেয়ারম্যান রাজউক
২.    পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন
৩.    বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন
৪.    বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতি

Sunday, January 31, 2016

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে স্বাধীনতা পদক/একুশে পদক প্রদান প্রসঙ্গে।

বরাবর
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়
ঢাকা, বাংলাদেশ।


বিষয় : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে স্বাধীনতা পদক/একুশে পদক প্রদান প্রসঙ্গে।

জনাব
শুভেচ্ছা নিবেন।  নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও দেশের চিকিৎসা সেবায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আস্থার নাম। গভীর রাত, ভোর, দুপুর, হরতাল, বন্যা, বিত্তবান-বিত্তহীন, সজ্ঞান-অজ্ঞান কারো জন্য এই হাসপাতালের দরজা বন্ধ হয় না। গত ৬৭বছরে এই হাসপাতাল কত কোটি পরিচয়হীন আর ভারী পরিচয়যুক্ত মানুষের সুখ,দু:খের সাথী হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তার হিসেব কোথাও নেই। মাত্র দুই হাজারের মত কর্মকর্তা কর্মচারী দিয়ে বছরে এখনও ১০ লরে বেশি মানুষকে সরাসরি সেবা দেয় এই হাসপাতালটি।

শুধু জনস্বাস্থ্যই নয়, ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকে ছাত্র ও জাতীয় রাজনীতিতে, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্র,চিকিৎসক,কর্মকর্তা,কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দেশের প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে যোদ্ধা, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় চিকিৎস, দেশের গঠনের অসংখ্য কারিগর তৈরির কারখানা এই ঢামেক।

সীমিত লোকবল, সীমিত সম্পদ এর পাশাপাশি নানাবিধ সমস্যার কারণে এই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হাসপাতালের সেবা নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন উঠে। তথাপি গরীব সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় আশ্রয়স্থল হাসপাতাল। রাষ্ট্রীয় এই হাসপাতাল সেবা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে , কিন্তু সেবা প্রদানের নূন্যতম স্বীকৃতি নেই।

ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকে ছাত্র ও জাতীয় রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় স্বীকৃতি সরূপ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অবদানের জন্য এই হাসপাতালকে স্বাধীনতা পদক / একুশে পদক প্রদান করা হোক। এক ধরনের ইতিবাচক স্বীকৃতি তাদেরকে জনগণকে আন্তরিক সেবাদানে আরো উদ্ধুদ্ধ করবে।

আমরা বিশ্বাস করি আপনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আর জনগণের দায়িত্বশীল আচরণ ও ভালবাসায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম আরো গতিশীল হয়ে উঠবে।

অনুলিপি :
১.    মাননীয় মন্ত্রী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
২.     সিনিয়র সচিব, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
৩.    সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
৪.    মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
৫.    মহাপরিচালক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল


ধন্যবাদসহ
সৈয়দ সাইফুল আলম
০১৫৫২৪৪২৮১৪
shovan1209@yahoo.com

Wednesday, January 6, 2016

নদীত গিয়ে লাভ কি, আসুন বনে যাই। বনে যেতেও ভয় হয়। আমি ভীতু মানুষ।

 

 সন্ধ্যা হবার একটু বেশি আগেই এখানে সন্ধ্যা হয়ে যায়। বিদ্যুৎ এর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে ওঠেনি জীবন যাত্রা। হাতের ঘড়ি থেকে সূর্য ঘড়িটাই প্রভাব বেশি এই মানুষগুলোর জীবনে।

শিয়ালের হাক-ডাক দিনের আলো নিভে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু। শহুরের শীত নয়, এখানে শীতটা কিছুটা ক্ষ্যাপাটে। শীতের একটা ভিন্ন রূপ আছে এখানে।

নদীর পাশেই বন কিংবা বনের পাশে নদী। যাই বলি না কেন। তার মাঝখানেই থাকার জায়গা। ঘরটা মন্দ নয়। ঘর থেকে বের হলেই নদী অথবা বন। কোথায় যাবেন?

এই ঠান্ডায় নদীত গিয়ে লাভ কি, আসুন বনে যাই। বনে যেতেও ভয় হয়। আমি ভীতু মানুষ।
আর কয়েকজন মানুষ হলে ভাল হত। আসে পাশে একটা সাহসী মানুষ থাকলে বনের রাতের রূপটা দেখা যেত।
নাহ ঢাকা থেকে খুব দূরের কোন গ্রাম কিংবা গহীন অরণ্য নয়। ঢাকার পাশেই পেতে পারেন এই স্বাদ। শীতকে কাবু করে রাত তো অনেক কাটিয়েছেন কম্বল মুড়ি দিয়ে। একটু শীত উপভোগ করার সুযোগটাও হয়নি জীবনে, তা কি করে হয়।
যদি আমার চেয়ে আপনার সাহস বেশি থাকে। যদি মনে হয় স্লীপিং ব্যাগটায় ঘুমিয়ে পার করে দিতে পারবেন রাত কোন অভিযোগ ছাড়াই ।

তবে শুক্র/শনিবার বাদ। কারণ বন্ধের দিনে এই একরুমের বাংলোর কোনভাবেই ফাঁকা পাওয়া সম্ভব নয়। তবে কর্মদিবসে এখানে ফাঁকা । রাতগুলো আরো গভীর অন্ধকার হয়ে ফিরে আসে। আগামী জোছনায় কয়েকটা সাহসী মানুষ ভাড়া করে নিয়ে যেতে চাই।থাকার জন্য কোন ভাড়া দিতে হবে না। শুধুমাত্র যাতায়াত ভাড়া আর যার যার খাবার বিলটা নিজে দিয়ে দিবেন।

রাজি থাকলে ইনবক্সে জানিয়ে রাখুন। নিরাপত্তার বিষয়ে বলে রাখি শতভাগ নিরাপদ। কারণ ঘুমের মাঝে ভূমিকম্প হলেও আপনি দেয়াল চাপা পড়ে মরবেন না। আর চোর ডাকাত ???? খুব কাছাকাছি বাড়িটাও মাত্র ১.৫ দূরে। আপনার হাত ঘড়ির টিক টিক শব্দ, শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ ছাড়া অন্য সকল শব্দই প্রকৃতির সৌন্দর্য রূপে গণ্য সেখানে।

ভয়ে ভয়ে আমি একটা বুকিং দিয়ে দিলাম। গত জোছনার মত আশা করি এই জোছনাও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
খুব বেশি ভয় পাবার কারণ নেই। কারণ ওখানে ছবি এই বাসিন্দরা থাকে বহু বছর ধরে।