ঢাকার রাস্তায় ফল,বনজ ও ঔষধি গাছ
ঢাকা
পৃথিবীর বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর। এই তথ্য এখন সকলেরই জানা। কিন্তু এই
শহরটা বাসযোগ্য রাখার জন্য দিন রাত কিছু মানুষ কাজ করছে। কোথাও তাদের
স্বীকৃতি নেই। স্বীকৃতি তাদের কাম্য নয়। কেউবা মুখ লুকান ক্যামেরা থেকে।
দাবী একটাই, আড়ালে থেকে কাজ করতে চাই। দিন কয়েক ধরে ঢাকার রাস্তায় কি কি
ফলের গাছ আর পাখির বাসা আছে তার ছবি তুলেছি। অবাক হওয়ার মত তথ্য। কি নেই
ঢাকায় এখনো আম,জাম,পেয়ারা লেবু, আমলকি, কাঠাল, কলা, জামরুল, বেতফল, সুজিফল,
কামরাঙ্গা, পেপে, তাল, নারিকেল,সুপারি, তেতুল, জলপাই আরো কত গাছ। আরো বেশি
অবাক গাছগুলোতে ফল ধরে, অনেক ফল গাছেই পাকে। কিছু গাছে পাখির বাসা ও আছে।
এই রকম গাছ, ফল,ফুল দিয়ে এই এ্যালবাম।
ফল, ফুল, গাছ থাকবে তো
নিরাপদ? কিংবা নাইবা থাকুক নিরাপদ। যাদের জন্য গাছ তারা তো উপভোগ করতে
পারে। একটা পাখি যখন দেখি এই বটের ফল মুখে নিয়ে উড়াল দিল তখন প্রাণ জুড়ায়।
মনে হয় গাছটা লাগিয়ে ছিলাম শুধু এই দৃশ্যটা দেখার জন্যই। তাতেই সার্থকতা।
নিজের মনের তৃপ্তির আর প্রকৃতির প্রতি ভালবাসায় তারা গাছ লাগান ঢাকার
রাস্তায়। যখন ঢাকায়া রাস্তার ধারে ফলের গাছ লাগালোর সিন্ধান্ত নিয়েছি তখন
অনেকে বলেছে পাগল। কিন্তু আমি বলি পাগলে জয় আসন্ন। গাছগুলোতে ফল ধরেছে,ফুল
ফুটছে।
আজের সকাল শুরু রাস্তার ধারে ফলের গাছ লাগনো এক পাগলের
সাথে চায়ের টেবিলে। শুভ সকাল। পাগলে জয় আসন্ন। জয় হোক প্রকৃতি প্রেমিক এই
পাগলদের।
|
গাছের
নাম নিম। যার গুণের শেষ নেই। কথায় আছে একটি বাড়ীতে যদি নিম গাছ থাকে তবে
ঐ বাড়ী থেকে রোগ বালাই দূরে থাকে। এমনকি পোকা-মাকড় ও সে বাড়ীতে কম দেখা
যায়। নিমের গুণ অপরিসীম। নিমের বহুবিধ এবং ব্যাপক ব্যবহারের জন্য বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। রাজধানীর
আগারগাঁও,মিরপুর রোডে সারি সারি নিমের দেখা পাবেন। |
|
ঢাকার
রাস্তায় বিশাল দেহী এই বট গাছটি আমাদের বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবারহ করছে। এই
গাছি যিনি রোপন করেছে তিনি কখনো কি আপনার আমার বাসায় মাস শেষে অক্সিজেনের
জন্য বিল পাঠিয়েছেন? আমরা কি একটি গাছ রোপন করেছি আমার অক্সিজেনের
জন্য? উত্তর যাই হোক না কেন। আমরা সবাই অক্সিজেনে গ্রহণ করি। এবং চাই
বিশুদ্ধ অক্সিজেন। তবে কেন নয়। আসুন একটি গাছ লাগাই। অক্সিজেনের কারখানা
বানাই। |
|
ইংরেজিতে
সাজনার নাম 'ড্রামস্টিক' যার অর্থ ঢোলের লাঠি। সাজনার ইংরেজি নামটি অদ্ভুত
হলেও এটি একটি অতি প্রয়োজনীয় জীবনরক্ষাকারী উদ্ভিদ। বাংলাদেশে এ নিয়ে তেমন
গবেষণা না হলেও বিশ্বের বহু দেশে নানা রকমের গবেষণা হয়েছে; বিশেষ করে এ
গাছ হরমোন বর্ধক ঔষধি গুণসম্পন্ন, কাগজ তৈরি ইত্যাদি বিষয় ছাড়াও প্রাচীনকাল
থেকেই আমাদের দেশে এটি সবজির পাশাপাশি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
দেশের সর্বত্রই সাজনা পাওয়া যায়। ঢাকার মোহাম্মপুর, ধানমন্ডির অলিগলিতে কয়েকশ সাজনা গাছের দেখা মিলবে। |
|
এর
নাম ডুমুর। ঢাকার রাস্তায় দেখা যায় কম। তবে একটু ঝোপঝাড় মানেই ডুমুরের
আখড়া। সংসদ ভবন চত্ত্বর, বানিজ্য মেলা আগারগাঁও, মান্ডা, বাসাবোর দিকে
ডুমুরের দেখা মেলে মেলা। ডুমুর কয়েক প্রজাতির হয়। বাংলাদেশে সচরাচর
যে ডুমুর পাওয়া যায় (Ficus hispida) তার ফল ছোট এবং খাওয়ার অনুপযুক্ত।
এর আরেক নাম 'কাকডুমুর'। এই গাছ অযত্নে-অবহেলায় এখানে সেখানে ব্যাপক
সংখ্যায় গজিয়ে ওঠে। গাছ তুলনামূলকভাবে ছোট। এটি এশিয়ার অনেক অঞ্চলে এবং
অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়।[৩][৪] পাখিরাই প্রধানতঃ এই ডুমুর খেয়ে থাকে
এবং পাখির বিষ্ঠার মাধ্যমে বীজের বিস্তার হয়ে থাকে। অনেক এলাকায় এই ডুমুর
দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। এই ডুমুরের পাতা শিরিশ কাগজের মত
খসখসে। এর ফল কান্ডের গায়ে থোকায় থোকায় জন্মে। | | | | | | | | | | | | |
|
কাঠ
বাদাম (বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia catappa) একটি বৃহদাকৃতির গাছের ফল। ফলের
নাম অনুযায়ি এই গাছকে কাঠ বাদাম গাছ ডাকা হয়। এই গাছ ছাতার মত ছায়া দেয়।
গাছগুলোতে এত ঘন পাতা যে বৃষ্টি শুরু হবার অনেক পরে গাছের নিচে পানি পড়ে। ঢাকায় রাস্তার ধারে প্রায়ই দেখা পাবেন। বিশেষ করে নিউ মার্কেট যাওয়ার পথে ঢাকা কলেজের সামনে কয়েকটি কাঠ বাদাম গাছ দেখা যায়। আর মোটা মানুষদের জন্য এই বাদাম বিশেষ উপকারী।
কাঠবাদামে রয়েছে ফাইটোস্টেরল এবং মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যা
দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে। কাঁচা কাঠবাদাম প্রোটিন এবং
ফাইবারের উৎস যা অনেক সময় ধরে ক্ষুধার উদ্রেক করে না। এবং ক্ষুধা কমায়। এতে
করে ওজন কমতে সাহায্য করে। |
|
ঢাকার রাস্তার ধারে খেজুর গাছের দেখা পাওয়া যায়। এই গাছটি আমি শিশু পার্ক এলাকায় দেখেছি।
খেজুর (সংস্কৃত: खर्जूरम्); (ইংরেজি: Date Palm) এক ধরনের তালজাতীয়
শাখাবিহীন বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা (Phoenix
dactylifera)। মানব সভ্যতার ইতিহাসে সুমিষ্ট ফল হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা
পাওয়ায় অনেক বছর পূর্ব থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে। এ গাছটি প্রধানতঃ মরু
এলাকায় ভাল জন্মে। খেজুর গাছের ফলকে খেজুররূপে
আখ্যায়িত করা হয়। মাঝারী আকারের গাছ হিসেবে খেজুর গাছের উচ্চতা গড়পড়তা
১৫ মিটার থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর লম্বা পাতা রয়েছে যা পাখির
পালকের আকৃতিবিশিষ্ট। দৈর্ঘ্যে পাতাগুলো ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত হয়।
পাতায় দৃশ্যমান পত্রদণ্ড রয়েছে। এক বা একাধিক বৃক্ষ কাণ্ড রয়েছে যা
একটিমাত্র শাখা থেকে এসেছে।
|
|
এর নাম তেতুল গাছ। আমি দেখেছি আদাবর থেকে শ্যামলী রিং রোডে যাওয়ার পথে। এতে রয়েছে প্রচুর ভেষজ ও পুষ্টিগুন। -তেতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। -রক্তে কোলষ্টেরল কমায়। -তেঁতুল চর্বি কমানোয় বেশ বড় ভূমিকা রাখে। -এতে কোলস্টেরল ও ট্রাইগ্রাইসেরাইডের মাত্রা এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। -শরীরের মেদ কমাতেও কাজ করে তেতুল। -এতে টারটারিক এ্যাসিড থাকায় খাবার হজমে সহায়তা করে। -শরবত করেও খাওয়া যেতে পারে তেতুল। -পেটের বায়ূ, হাত-পা জ্বালায় এ শরবত কার্যকর পথ্য। -তিন-চার দানা পুরনো তেতুলের এক কাপ রসের সঙ্গে চিনি বা লবন মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ভেষজ চিকিৎসকরা। |
|
গাছের
সঙ্গে গাছের বিয়ে ! গল্পের মতো শোনালেও তা সত্য বেশ ধুমধামের সাথে দেশের
বিভিন্ন জায়গায় বট-পাকুড়ের বিয়ে হতো আগে। ঢাকায় এখনো অনেক জায়গায় বট আর
পাকুর এক সাথে দেখা যায়। বিয়ে দেওয়ার মত দায়িত্বশীল কাউকে না পাওয়ায়
গাছগুলোর বিয়ে হচ্ছে না। অনেকেই ভুল করে পাকুর গাছকে বট গাছ ভাবেন। যাই হোক ইহা পাকুর গাছ। | | | | |
এখানে প্রকাশিত সকল ছবি কারিগর : সৈয়দ সাইফুল আলম,
তথ্য বেশিভার উইকিপিডিয়া এবং স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এই ব্লগের সকল তথ্য, ছবি, ভিডিও কপিরাইট ঝামেলা মুক্ত। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও বৃহত্তর স্বার্থে যে কেউ কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment