Tuesday, August 23, 2016

মুড়ি ভর্তা

৮০০টাকায় মুড়ি ভর্তা? না ভুল বলিনি অথবা ভুল শুনেনি। পাঁচ তারকা কোন হোটেলে নয় বাড্ডা লিংক রোড, গুদারা ঘাট, ঝিল পাড়ের দোকান। মুড়ি ভর্তা মানে যেই সেই মুড়ি ভর্তা নয়। ৮০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে বিশ টাকা পর্যন্ত। সাথে পাবেন টক, অদ্ভুদ টক, দই টক, গ্রীন টক।

যেহেতু দোকানের নাম শাহী মুড়ি ভর্ত। সেখানে নবাবী খাবারও পাবেন। নবাবী ভুড়ি ভুনা নামের খাবারের দাম মাত্র ৪০টাকা। মশলা, ডিম, মুরগী, কোয়েল, কবুতর, গরু কালা ভুনা, হাঁস কত কি দিয়ে যে মুড়ি ভর্তা হয় এই দোকানে।

যাদের বিশ্বাস টাকা হলে সব মিলে তারা কিছুটা হতাশ হবেন। সময় মত না গেলে লাখ টাকা হলেও আপনি শাহী মুড়ি ভর্তা পাবেন না।

টেস্টিং সল্ট আর পোড়া তেল ছাড়া তৈরি এই খাবার (বিক্রেতার দাবী)। খাওয়ার জন্য আমরা যখন গেলাম তখন প্রায়ই সব শেষ শেষ অবস্থা।

গতকাল আমি গিয়েছিলাম আমার এক দোস্তকে থাব্রাইতে। হাতিরঝিল পার হয়ে লিংক রোড হয়ে বারিধারা যাব। পথেই মিলল এই দোকান।

দোকানের মালিক জসীম সাহেব। কোটি টাকা ছাড়াও যে ঢাকায় ব্যবসা করা যায়। আস্থা আর ক্রেতার সন্তুষ্টির মাধ্যমে শীর্ষে পৌছা যায় তার প্রমাণ শাহী মুড়ি ভর্তা।

শুভ কামনা তরুন ব্যবসায়ীদের যারা ভাবছেন ব্যবসা করবেন করবেন। অনেক তো হল মিটিং-সিটিং, ওয়ার্কসপ, সেমিনার। এবার নেমে পড়ুন। মুড়ি ভর্তা কিংবা আলু ভর্তার দোকান। ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে পারলেই আপনি সফল।

প্রথমে মুনাফা থেকে ক্রেতার সন্তুষ্টির দিকে বেশি নজর দিন। সফল হবেন ইন শা আল্লাহ।



Thursday, August 18, 2016

অহনদের কান্না শুনতে পান কি মাননীয় মন্ত্রী ??

অহন অহন বয়স মাত্র ৯। এই বয়সের অহনে বয়স থেকে বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করছে দ্রুত বড় হয়ে যেতে। ৯ বছর বয়সে যখন অহনের স্কুল আর খেলার মাঠ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। সেই বয়সে সে সারাদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত বিনামূল্যে সেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ নিয়েG।
 
খুলনা কিংবা দেশের অনলাইনে যারা সেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ করে তাদের মাঝে অহন খুবই পরিচিত নাম। জন্মের পাঁচ মাস বয়সে তার থ্যালাসিমিয়া ধরা পড়ে। তারপর থেকে প্রতি মাসেই তার রক্ত দরকার হয় নিজের জন্য। প্রথমে তার পরিবারের লোকজন রক্তের ব্যবস্থা করত। কিন্তু বছর কয়েক হল অহন নিজেই নিজের রক্ত সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শুধুই কি তাই আশেপাশে কারো রক্তের প্রয়োজন হলেই অহনের ডাক পড়ে।
 
সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা সেচ্ছায় রক্তদানকারী, রক্তসংগ্রহকারী সবাই যেন অহনের ডাকে সাড়া দেয় নিমিষে। ইদানিং তার শরীরে খুব তাড়াতাড়ি রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। তাই মাসে প্রায় তিন চার বার রক্তের প্রয়োজন হয়।
 
বিপত্তি বাধে রক্ত থেকে রেডসেল সংগ্রহ করা নিয়ে। খুলনা থেকে যশোর প্রায় ৬০ কি:মি। অহনের মা প্রথমদিন রক্তদাতাকে নিয়ে যান যশোর। তারপর সেই রক্ত বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেডসেল আলাদা করা হয়। পরেদিন সেই রক্ত এনে অহনকে খুলনায় দেওয়া হয়। এই আনা নেওয়া, রক্ত দেওয়া প্রক্রিয়াটা যতটা সহজ মনে হয় তারচেয়ে হাজার গুণ কষ্ট চাপা পড়ে আছে শিশু অহনের বুকে । 
 
 
আমি আমার আপূর কাছে শুনেছি জাপানে নাকি শুধুমাত্র একটি স্কুলের মেয়ের জন্য প্রতিদিন রেলগাড়ি যেতে স্টেশন। আমাদের দেশেও নাকি যোগাযোগ মন্ত্রী এক মেয়ের স্কুলে যাতায়াতের সমস্যার কথা শুনে বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
 
আমি অহন। আমার মত অনেক অহন আছে খুলনায় l যাদের বেচে থাকার জন্য মাসে একবার দুইবার তিনবার রক্তের বিভিন্ন উপাদানের দরকার হয়। যেমন আমার দরকার হয় রেডসেল। আমার মা একদিন ডোনার নিয়ে যান খুলনা থেকে যশোর। তারপর রক্ত ওয়াশ হবার পর আবার রক্ত আনতে যেতে হয়। প্রতিবার ৬০ কিঃমিঃ । সেই রক্ত দেওয়ার জন্য আবার হাসপাতালে। সব মিলিয়ে আমার মায়ের খরচ ৩০০০টাকা। মাসে তিনবার হলে ৯০০০টাকা। কিন্তু যদি খুলনায় একটা রক্ত ওয়াস করার মেশিন থাকত।তাহলে এত টাকা লাগত না।
 
জাপানের মেয়েটির স্কুলের জন্য রেলগাড়ির দাম কত?
  ঢাকার স্কুলের পড়া মেয়েটির জন্য বাসের দাম কত?
 
মন্ত্রী আমরা তো আরো অনেকদিন বাঁচতে চাই। আমাদের রেড সেল দরকার শিশুদের জন্য একটা মেশিনের দাম কত? একটা মেশিন চাই।
 
ইদানিং আমার প্রতি সপ্তাহে রক্তের দরকার হয়। আমার মা তো ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে যশোর ও খুলনা যেতে যেতে। মন্ত্রী একটা মেশিন দিয়ে দেন না প্লিজ।
 
 
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর অহনের এই আকুতি হাজার হাজার মানুষ শেয়ার দেয়। অসংখ্য মন্তব্য। সবার অনুরোধ মাননীয় মন্ত্রী যেন একটা রক্ত ওয়াসের মেশিন দিয়ে দেয় খুলনা মেডিক্যালে হাসপাতালে। যদিও ফেইস বুকে একজন কমকর্তা জানিয়েছেন খুলনা মেডিক্যাল কলেজে এই মেশিনটি আছে নষ্ট অবস্থায়। মাত্র এক লক্ষ টাকা প্রয়োজন মেশিনটি মেরামত করার জন্য। মাননীয় মন্ত্রী প্রায় এক মাস হয়ে গেল খুলনায় এখনো মেশিনটি পৌছেনি।
 
মাননীয় মন্ত্রী অহনের অনুরোধটি বিশেষ বিবেচনায় নিন।হাসপাতালের মেশিনটি দ্রুত মেরামত করে দিন।
 
 

Monday, August 8, 2016

টাকা না হলেও অনেক কিছু ঢাকায় মিলে যেমন খাবার। বিনামূল্যে খাবার, মাগনা খাবার।

ঢাকায় টাকা উড়ে। শুধুই কি টাকা?
এই ঢাকায় টাকায় কত কি যে পাওয়া যায় তার হিসেব নেই। টাকা হলে বাঘের দুধ মিলে। কিন্তু টাকা না হলেও অনেক কিছু ঢাকায় মিলে, যেমন খাবার।  বিনামূল্যে খাবার, মাগনা খাবার।


প্রতিদিন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে খাবার পাওয়া যায়। কোথাও ভাত-ডাল-সবজি, কোথাও তেহারী, কেথাও খিচুরী।


ধানমন্ডিতে যদি কোনদিন দুপুরে খাবারের সংকটে পড়েন তবে সাত মসজিদ রোডের আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের মেহমানখানার অতিথি হতে পারেন। গতকাল আমি গিয়েছিলাম।


প্রতিদিন এখানে প্রায় হাজার দুই লোক দুপুরের খাবার খায়। যত খুশি তত খাও এই খাবার। কোন বাধা নেই। সারি সারি প্লেট সাজানো , পানির ট্যাংক, গ্লাস। হাত মুখ ধুয়ে। নাও আর খাও।


পোশাক আপনার যাই হোক না কেন? শেখ সাদীর মত আপনাকে এখানে বিব্রত হতে হবে না । এই মেহমানখানায় মেহমান হিসেবে সবাই সমান। পেটপুরে খেয়ে বাড়িতে নেওয়ার জন্য যদি আবদার করেন। তবে তাও রাজি মেহমানখানার লোকরা । আপনাকে পূণ আপ্যায়নেই নাকি তাদের পরিতৃপ্তি।

আমি গিয়েছিলাম গাজী আহমদ উল্লা ভাইয়ের রুমে। কেন এই খাবার? প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই বলল। আগে একটু খেয়ে নিন, তারপর প্রশ্নের উত্তর।

আমরা পেটপুরে খিচুড়ী খেয়ে আবার জানতে চাইলাম।

কেন এই খাবার? প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আমাদের এখানে খেতে আসে। আমরা তাদের মেহমানদারী করতে পারি। তাতেই কতৃপক্ষের সন্তুষ্টি।

রাস্তায় নেমে কথা বলি কয়েকজন রিকশা চালক, ভবঘুরে মানুষের সাথে খাবার কেমন?

উত্তর একটাই স্বাদে ও মানে ঢাকার যে কোন খাবার দোকানকে পিছনে ফেলে দিবে ।

এবার আপনার পালা । চাইলেই গ্রহন করতে পারেন তাদের আপ্যায়ন।