Thursday, June 25, 2015

পুরান ঢাকার ইফতার। স্বাদ আর দরদাম

 
নিয়মিত২০১০ সাল পর্যন্ত আমি আর তানভীর ঢাকার অলি-গলিতে খাবারের সন্ধানে ঘুরেছি  । ধানমন্ডি, হাজারিবাগ, মিরপুর,পুরান ঢাকা, আটিবাজার, বনশ্রী, কল্যানপুর, পাগলা.... যেখানে মোটামোটি খাবারে গন্ধ পাওয়া গেছে, আমরা ঐখানেই ছুটেছি। এখনও সে ঢাকায় আসলে আমরা আয়োজন করে খাবারের খুঁজে বের হই। আমি খুব বেশি খেতে পারি তা নয়। আমি খাবারের দোকানের তালিকা টুকে রাখি মনে মনে।  কোথায় উটের মাংসের খিচুড়ী, ডাল মাখনি, বিউটি, জামের জুস, দুধ আদার চা, এলাচ চা, সুসি, দই বড়া, জিরা পানি, খেতাপুরী, ঢং সমুচা, মায়াবী পরটা, মহিউদ্দিনের কাটা মসলার ডাল ভুনা, বেগুন র্ভতা কিংবা ফাইসা মাছের ভাজি, সকাল বেলার ছানা-লেবু, রায়ের বাজারের বড় ড্যাগের শরবত, শাহজাহানপুরে কলোনীর পারদ কবুতরের হালুয়া কোনকিছুতেই আপত্তি নেই  আমাদের। যে খাবার আমাদের মুখে লাগেনি তা-ই আমাদের কাছে নতুন খাবার। আর তাই একবার পরীক্ষা করে নিতে আমাদের আপত্তি নেই।  যদি স্বাদ ভাল হয় তবে তানভীর ভয়ানক হয়ে উঠে। যেমন: কিছু বিরিয়ানীর দোকানের ৩/৪প্লেট বিরিয়ানী সে চালান করে। গাজীপুরের বকর ভাই নামের এক ব্যক্তির দোকানের ২৬ রকমের ভর্তা-ভার্জির সাথে ৬প্লেস ভাত সাবার হয়ে যায়। নারায়ানগঞ্জের  মাওরা হোটেলের ৪প্লেট ভাত সাথে অগণিত মাংস ভুনা তানভীরের খাদ্যের প্রতি ভালবাসার নমুনা। ঢাকা পিজা নামের এক দোকানের পিজাতে তার অরুচি নেই। অরুচি নেই কলিকাতা বিরিয়ানীতেও, নীলক্ষেতের তেহারী খেয়ে প্রেসার বেড়ে নীল হয়ে যাওয়া তার খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ফলের ব্যাপারেও তার আপত্তি নেই । কেজি ৫ আম এক রাতে হলেই ভাল। ২৫০ লিচু খেয়েও যখন শান্তি আসে না এক রাতে। এরপরের বছর আখাউড়ার কাছে মকন্দপুরে এটা আস্ত লিচুর বাগান রেখে দিল। আমার ডজনখানি মানুষ সেই বাগান ধ্বংস করে দিয়েছিলাম একদিনেই।


এই শহরে (Dhaka) যত মোড় আছে, আছে গলি তত গলি/মোড়ে তানভীরের বান্ধবী আছে। আর সেই বান্ধবীদের বাড়ি মোড়ের বিখ্যাত খাবারের দোকানদারটি তানভীরের পরিচিত। এরকম কথা আমাদের আড্ডায় খুবই পরিচিত। সেই তানভীর ইউরোপ পাড়ি জমাছে স্থায়ী ভাবে। দিন দুয়েক আগে এসে বলল দোস্ত আয় শেষ একটা ঘুরতি দিয়ে আসি। সব পুরান জায়গাতে। সাথে স্মৃতিগুলো একটু ঘর্ষে নেই।  আমরা স্মৃতি ঘর্ষতে গেলাম চকবাজারে। চকবাজারের ইফতার নিয়ে আমার কোন শখ আহ্লাদ নেই। তারপরও তার সাথে যাওয়া।  আমি চাই জীবনের আরো বহুবার দোস্ত তোর সাথে স্মৃতি ঘষাঘষি খাবে। তুই ভাল থাক।


তানভীরের সাথে ইফতারে কিছু মূহুর্ত এবং খাবারে দরদাম। সময় থাকলে পুরনা ঢাকার চকবাজারের ইফতার বাজারে ঘুরে আসতে পারেন। এক চকবাজারেই পেতে পারে ঢাকাইয়া ইফতারে নানা পদ।




 বড়লোকের পুলায় খায়: চকবাজার এলাকায় ইফতার বাজারে গেলেই  “ বড়লোকের পুলায় খায়, ঠোঙ্গায় ভইরা লইয়া যায়” হাক ডাক শুনতে পাবেন। বিভিন্ন ধরনের মাংস,ডিম, ছোলা,বুট, চিড়া, ঘি প্রভৃতির সমন্বয়ে তৈরি হয় বড়লোকের পুলায় খায়। এই খাবারটি কেজি ধরে বিক্রি হয়।
২০১৫ সালের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০টাকা ধরে।


বি:দ্র: যারা  বড়লোকের পুলায় খায় খেয়ে অভ্যস্থ নয় তারা প্রথমবার ২৫০ গ্রামের বেশি কেনার দরকার নেই।




আস্ত হাসের ভুনা: খাবারের জন্য বিখ্যাত পুরানা ঢাকা সব আস্ত আস্তই যেন একটা আলাদা ভাব নিয়ে আসে। পাবেন আস্ত হাঁস ভুনা, সাথে ডিম সিদ্ধ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা প্রতি পিস হাঁস।

সুতা কাবাব: পুরান ঢাকার খুবই বিখ্যাত খাবার। তবে মুড়ি ভর্তা কিংবা পরটা ছাড়া খেলে এর স্বাদ তেমন পাবেন না। ৫০ থেকে ১০০ টাকার যে প্যাকেট পাওয়া যায় প্রথমবার তাই কিনতে পারেন।
রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে অন্যতম কাবাব। এই কাবাবের আবার রকমফের আছে। ঢাকাইয়াদের প্রিয় এক পদ সুতি কাবাব। বিশেষ করে ইফতারির পদ হিসেবে অনেক অনেক জনপ্রিয়। মুড়ি মাখার সাথে মেখে কিংবা পরোটা দিয়ে খেলে সুতি কাবাবের আসল স্বাদ মিলবে। শুধু সুতি কাবাব খেয়ে এর স্বাদ পাওয়া যাবে না। - See more at: http://www.priyo.com/food/recipes/6467.html#sthash.WcK0MT0s.dpuf

শাহী জিলাপী: কত বড় জিলাপী দেখেছেন জীবনে। চকবাজারে পাবেন ১কেজি থেকে ২কেজি ওজনের জিলাপী। কেজি ১৬০টাকা।



আস্ত খাসির রান: ঢাকাইয়া ইফতারে আস্ত খাসির রান থাকবে না তা হবে না। খুব সুন্দর আলিশান প্যাকেটে আস্ত খাসির রান মিলবে। দাম ৩৫০টাকা প্রতিটি।

আস্ত কোয়েল পাখি ভুনা: সকল কিছু আস্ত ভুনা পুরান ঢাকার খাবারের বিখ্যাত রূপ। আস্ত কোয়েল ভুনার দামটাও হাতের নাগালে মাত্র ৬৫টা প্রতিটি। এর স্বাদ অনেকটা কবুতর ভুনার মত। 


                                            
দই বড়া: এই খাবারটি নিয়ে আমার এবং আমার দোস্তের খুবই অনিহা আছে তাই এর সকল প্রকার তথ্য প্রদান থেকে বিরত রইলাম।





কিভাবে যাবেন চকবাজার?
শাহবাগ থেকে রিকশায় ভাড়া ৫০টাকা
আজিমপুর, পলাশী, বঙ্গবাজার থেকে রিকশা ভাড়া ৩০/৪০টাকা।



আর এই লিংকে পাবেন ঢাকাইয়া ইফতারের তথ্য ..  http://bangla-jungle.blogspot.com/2015/06/blog-post_25.html

খাবারের ছবি ফেবুতে দেওয়া এ প্রকার অপরাধ। তাই খাবারের ছবি প্রদান থেকে বিরত থাকুন।








হনুমানটি রক্ষায় এগিয়ে আসুন।

 https://youtu.be/SG88zXbVbCs
এই হনুমান টি আমি আজ দেখা পেয়েছি ঢাকার কাছে ভাকুর্তা এলাকায়। স্থানীয় এলাকাবাসী হনুমান খাবার ও আশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করছে। একদল  শিশু হনুমান পরিচর্যায় নিয়োজিত। আমি যাওয়ার পর পর বলা হল কোন ভাবেই হনুমানকে বিরক্ত করা চলবে না।


আমি তাদের শর্তে রাজি হলাম। গত কয়েকদিন আগে ঐ এলাকায় দুটি শিয়াল শাবক বিক্রির জন্য ধরা হয়েছিল। আজ সেই এলাকার মানুষজন হনুমানটি রক্ষার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত।  এবার বাকি কাজ বন্য বিভাগের।  প্রতিকূল এই পরিবেশে হনুমানটি বেঁচে থাকা কঠিন হবে। তাই যথাযথ কতৃপক্ষ যদি এগিয়ে আসে। তবে হনুমান রক্ষা করা সম্ভব হবে।


মুখপোড়া হনুমান বা লালচে হনুমান (ইংরেজি: Capped langur, Capped leafed monkey) বানর প্রজাতির একটি স্তন্যপায়ী প্রানী । এরা Cercopithecidae পরিবারের অর্ন্তভুক্ত এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Trachypithecus pileatus । বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান, চীন, ভারত এবং মায়ানমারে এদের পাওয়া যায়। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হচ্ছে ক্রান্তিয় ও নিরক্ষীয় শুষ্ক বনভূমি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, শিল্পায়ন ও কৃষিক্ষেত্রের সম্প্রসারণের দরুণ বনভূমি পরিমাণ হ্রাসের কারণে এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।